Breaking







Thursday, November 2, 2023

বিভিন্ন শিলার শ্রেণীবিভাগ ও বৈশিষ্ট্য PDF || বিভিন্ন প্রকার শিলা

বিভিন্ন শিলার প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য PDF

শিলার শ্রেণীবিভাগ ও বৈশিষ্ট্য PDF Download
শিলার শ্রেণীবিভাগ ও বৈশিষ্ট্য

শিলার সংজ্ঞা:

ভূত্বক যেসব উপাদান দ্বারা গঠিত তাদের সাধারণ নাম শিলা। ভূতত্ত্ববিদগণের মতে দুই বা ততোধিক খনিজ দ্রব্যের সংমিশ্রণে এসব সৃষ্টি হয়। ভূত্বক গঠনকারী সকল কঠিন ও কোমল পদার্থই হল শিলা।

বিভিন্ন শিলার শ্রেণীবিভাগ

ভূত্বক বিভিন্ন প্রকার শিলা দ্বারা গঠিত এবং প্রত্যেক ধরনের শিলা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। কোনো শিলা কাদার মতো নরম আবার কোনো শিলা গ্রানাইট পাথরের মতো শক্ত। সব ধরনের শিলাই প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট। উৎপত্তি ও গঠনের দিক থেকে শিলাকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:-

  1. আগ্নেয় শিলা, উদাহরণ:- গ্রানাইট
  2. পাললিক শিলা, উদাহরণ:- চুনাপাথর
  3. রূপান্তরিত শিলা, উদাহরণ:- মার্বেল


আগ্নেয় শিলা

সৃষ্টির প্রথমে পৃথিবী উত্তপ্ত গ্যাসীয়পিন্ড ছিল। এই গ্যাসপিন্ড ক্রমান্বয়ে তাপ বিকিরণ করে তরল হয়। পরে আরাে তাপ বিকিরণ করে উপরিভাগ শীতল ও কঠিন আকার ধারণ করে। এভাবে গলিত অবস্থা থেকে ঘনীভূত বা কঠিন হয়ে যে শিলা গঠিত হয় তাকে আগ্নেয় শিলা বলে। ভূ-অভ্যন্তরে উত্তপ্ত ম্যাগমা শীতল ও কেলাসিত হয়ে আগ্নেয় শিলা গঠিত হয়। অগ্নিময় অবস্থা থেকে এই শিলার সৃষ্টি বলে একে আগ্নেয় শিলা বলা হয় । ইংরেজিতে এ ধরনের শিলাকে Igneous Rock বলে। Igneous শব্দের অর্থ আগুন। আগ্নেয় শিলা পৃথিবীর প্রথম পর্যায়ের শিলা বলে একে প্রাথমিক শিলাও বলা হয়। এ শিলায় কোনাে স্তর নেই, তাই এই শিলার অপর নাম অন্তরীভূত শিলা। এই শিলায় কোনাে জীবাশ্ম নেই। আগ্নেয়গিরি বা ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় ভূ-ত্বকের দুর্বল অংশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। তখন পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে। এভাবে ব্যাসল্ট ও গ্রানাইট শিলার সৃষ্টি হয়েছে।

আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্য

১।স্তরবিহীন: উত্তপ্ত গলিত অবস্থা থেকে ঠান্ডা হয়ে জমাট বেঁধে এই জাতীয় শিলার সৃষ্টি হয় বলে এতে কোনাে স্তর থাকে।

২।জীবাশ্মবিহীন: উত্তপ্ত গলিত পদার্থ থেকে আগ্নেয় শিলার উৎপত্তি বিধায় কোনাে প্রাণি বা উদ্ভিদের অস্তিত্ব আশা করা যায় না। এ কারণে এ জাতীয় শিলার মধ্যে জীবাশ্ম পাওয়া যায় না।

৩।কেলাসিত: উত্তপ্ত গলিত অবস্থা থেকে তাপ বিকিরণ করে এ জাতীয় শিলা তৈরি হয় বলে ক্ষেত্রবিশেষে কেলাসিত হয়। বা নির্দিষ্ট আকারে দানা বাঁধে।

৪।অপ্রবেশ্য: আগ্নেয় শিলার দানাগুলির মধ্যে কোনাে ছিদ্র না থাকায় এই শিলায় জল করতে পারে না। তাই আগ্নেয় শিলা অপ্রবেশ্য।

৫।সুদৃঢ় ও সুসংহত: উত্তপ্ত গলিত অবস্থা থেকে তাপ বিকিরণ করে উৎপন্ন হয় বলে এ শিলা সুদৃঢ় ও সুসংহত।

৬।প্রাচীনতম: আগ্নেয় শিলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম শিলা। এই শিলা থেকে অন্যান্য শিলার উৎপত্তি হয়েছে।

৭।অপেক্ষাকৃত ভারী: আগ্নেয় শিলা অন্যান্য শিলার চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভারী।

পাললিক শিলা

পলি সঞ্চিত হয়ে যে শিলা গঠন করে তাকে পাললিক শিলা বলে। এ শিলার পলি সাধারণত স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়। ভূ-পৃষ্ঠের প্রাথমিক শিলাগুলাে যুগ যুগ ধরে রৌদ্র, বৃষ্টি, বায়ুপ্রবাহ সাগর তরঙ্গ প্রভৃতি নানা প্রকার ঘাত-প্রতিঘাত ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং খন্ড-বিখন্ড ও চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বালি, কাঁকর, কাঁদা প্রভৃতিতে পরিণত হয়। ক্ষয়িত শিলাকণা জলস্রোত, বায়ু এবং হিমবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে পলল বা তলানিরূপে কোনাে নিম্নভূমি, হ্রদ এবং সাগরগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। পরবর্তীতে ঐসব পদার্থ ভূ-গর্ভের উত্তাপে ও উপরের শিলাস্তরের চাপে জমাট বেঁধে কঠিন শিলায় পরিণত হয়। পাললিক শিলা ভূ-ত্বকের মােট আয়তনের শতকরা ৫ ভাগ। তবে মহাদেশীয় ভূ-ত্বকের উন্মুক্ত অংশের প্রায় ৭৫ ভাগই পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। পলল বা তলানি থেকে গঠিত হয় বলে এরূপ শিলাকে পাললিক শিলা বলে। স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয় বলে একে স্তরীভূত শিলাও বলে। বর্তমান সভ্যতার অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ পাললিক শিলা থেকে পাওয়া যায়। যেমন- কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি।

পাললিক শিলার বৈশিষ্ট্য

ক)স্তরীভূত: পাললিক শিলার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলাে এরা স্তরীভূত অর্থাৎ খনিজ উপাদানসমূহ স্থুল বা সূক্ষ্ম স্তরে স্তরে বিন্যস্ত থাকে। এই স্তরগুলাে সাধারণত আনুভূমিকভাবে সজ্জিত থাকে।

খ)জীবাশ্ম বিশিষ্ট: পাললিক শিলাস্তরে জীবাশ্মের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যে সকল জীব এই শিলাঞ্চলে বাস করে তাদের মৃতদেহ কালক্রমে পলির নিচে চাপা পড়ে। এর ফলে এদের দেহের কঠিন অংশ প্রস্তরীভূত হয়ে জীবাশ্মে পরিণত হয়।

গ)অকেলাসিত: এটি কখনও উত্তপ্ত অবস্থা হতে শীতল হয়ে সৃষ্টি হয় না, বিধায় এই শিলা অকেলাসিত (Non-Crystalline) শিলা।

ঘ)তরঙ্গচিহ্ন: এটি তরঙ্গ চিহ্নযুক্ত শিলা। জলভাগের তলদেশে এই জাতীয় শিলার সৃষ্টি হয় বলে এর মধ্যে তরঙ্গচিহ্ন (Ripple Marks) বর্তমান থাকে। আবার বায়ু দ্বারা গঠিত পাললিক শিলায়ও বাতাসের দ্বারা তরঙ্গ চিহ্নের সৃষ্টি হয়।

ঙ)কোমলতা: আগ্নেয় শিলার ভগ্নাংশ সঞ্চিত হয়ে পাললিক শিলার সৃষ্টি হয় বলে এই শিলা অন্য শিলা থেকে অপেক্ষাকৃত কোমল থাকে।

রূপান্তরিত শিলা

অনেক সময় প্রচন্ড তাপ ও চাপের জন্য রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আগ্নেয় ও পাললিক শিলা নতুন এক ধরনের শিলায় রূপান্তরিত হয় এবং আগের তুলনায় কঠিন ও কেলাসিত হয়, এই শিলাকে রূপান্তরিত শিলা বলে। পূর্বের রূপ ও অবস্থার পরিবর্তন হয় বলে একে রূপান্তরিত শিলা বলে। রূপান্তরিত শিলা মূলত আগ্নেয় ও পাললিক শিলার পরিবর্তিত রূপ। যেমন- চুনাপাথর পরিবর্তিত হয়ে মার্বেল, বেলেপাথর পরিবর্তিত হয়ে কোয়ার্টজাইট, কাঁদা পরিবর্তিত হয়ে শ্লেট, গ্রানাইট পরিবর্তিত হয়ে নীলে, কয়লা পরিবর্তিত হয়ে গ্রাফাইটে পরিণত হয় ।রূপান্তরিত শিলা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

রূপান্তরিত শিলার বৈশিষ্ট্য

ক)কেলাসিত: তাপ ও চাপে আগ্নেয় ও পাললিক শিলার পরিবর্তন হয়ে রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয় বলে এটি সাধারণত কেলসিত।

খ)কাঠিন্য: তাপ ও চাপে আগ্নেয় এবং পাললিক শিলা পরিবর্তিত হয়ে রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয় বলে এই শিলার কাঠিন্য অন্যান্য শিলার চেয়ে বেশি। ফলে এটি অধিকতর শক্ত ও মজবুত।

গ)জীবাশ্মহীন: পাললিক শিলার জীবাশ্ম রূপান্তরের ফলে বিলুপ্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে, আগ্নেয় শিলায় থেকে রূপান্তরিত হলেও জীবাশ্ম থাকে।

ঘ)সমান্তরাল: রূপান্তরিত শিলার উপাদানগুলাে সাধারণত সমান্তরালভাবে অবস্থান করে বলে এটি সমান্তরাল শিলা। এই সমান্তরাল, আনুভূমিক, তির্যক বা বক্র যে কোনােভাবেই হতে পারে।

ঙ)তরঙ্গচিত্র: তাপ ও চাপে এ শিলা তৈরি হয় বলে তরঙ্গচিত্র থাকে না।

শিলার সম্পূর্ণ তথ্যটি পিডিএফে রয়েছে

File Details::
File Name: বিভিন্ন প্রকার শিলা
File Format: PDF
No. of Pages:3
File Size:413 KB

Click Here to Download

No comments:

Post a Comment

Dont Leave Any Spam Link