পৃথিবীর গঠন : ভূত্বক, অশ্মমন্ডল, গুরুমন্ডল,কেন্দ্রমন্ডল PDF:
![]() |
পৃথিবীর গঠন |
পৃথিবীর বাহ্যিক গঠন
বর্তুলাকার পৃথিবী সৃষ্টির সময় ছিল একটি উত্তপ্ত গ্যাসীয়পিন্ড। সময়ের আবর্তে এটি শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বর্তমান অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। এই সময় পৃথিবীর বাইরের ভারী উপাদানগুলাে পৃথিবীর কেন্দ্রের আকর্ষণে কেন্দ্রের দিকে জমা হয় এবং হালকা উপাদানগুলাে ভরের তারতম্য অনুসারে পর্যায়ক্রমে নিচ থেকে উপরে স্তরে স্তরে জমা হয়। পৃথিবীর এই বিভিন্ন স্তরকে মন্ডল বলে। ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন নিচের দিকে পাতলা আবরণকে ভূ-ত্বক বলে।ভূ-ত্বকের গঠন (Composition of the Earth's Crust) :
পৃথিবীর উপরিভাগের শক্ত আবরণ ভূ-ত্বক বিভিন্ন ধরনের খনিজ ও শিলা দ্বারা গঠিত। ভূ-ত্বক অশ্মমন্ডলেরই উপরিভাগ যার মধ্যে অক্সিজেন ও সিলিকনের পরিমাণ বেশি। আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত মােট ১০৫টি মৌলিক উপাদানের মধ্যে ২০টি উপাদান ভূ-ত্বকের প্রায় শতকরা ৯৯.৫ অংশ দখল করে আছে। ভূ-ত্বকের গভীরতা সর্বত্র সমান নয়। তবে এর গড় গভীরতা ২০ কিলােমিটার। গ্রানাইট স্তরের গড় গভীরতা ৮ কিলােমিটার। ভূ-ত্বক গঠনকারী শিলারাশির ঘনত্ব ২.৭৫ থেকে ৩.০ পর্যন্ত। ভূ-ত্বক বা অশ্মমন্ডলের উপরিভাগেই পৃথিবীর বাহ্যিক দিকগুলাে দেখা যায়। যেমন- সমভূমি, মালভূমি, পাহাড়, পর্বত, নদী, হ্রদ, সাগর, মহাসাগর ইত্যাদি।পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন
পৃথিবীর অভ্যন্তরে কঠিন আবরণ ভেদ করে গভীরে প্রবেশ করে ভূ-অভ্যন্তরের অবস্থা জানার তেমন কোনো সুযোগ নেই। খনিজ সম্পদ আহরণের জন্য এ পর্যন্ত সবচেয়ে গভীরতম কূপ মাত্র ৮ কিলোমিটার ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পেরেছে। ক্ষয় কার্যের ফলে মাত্র ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার গভীরে উন্মুক্ত হয়েছে। এজন্য বিজ্ঞানীরা অভ্যন্তরভাগ সম্পর্কে জানার জন্য তিন ধরনের তথ্যের উপর নির্ভর করে থাকে, এগুলো হলো-১. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে প্রাপ্ত ভূ-অভ্যন্তরের শিলার নমুনা
২. পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের বৈশিষ্ট্য ও ঘনত্ব
৩. ভূকম্পন তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ
অশ্মমন্ডল(Lithosphere)
ভূপৃষ্ঠ থেকে অভ্যন্তরে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত প্রথম স্তর কে অশ্মমন্ডল বলে। ভূকম্পন তরঙ্গ থেকে জানা যায় যে এটি মূলত সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম উপাদান দিয়ে গঠিত যা সিয়াল(SiAl) নামে পরিচিত। ভূত্বকের নিচের দিকে প্রতি কিলোমিটারে ৩০ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।অশ্বমন্ডলের নিচে গুরুমন্ডল কেন্দ্রমন্ডল নামের আরও দুটি প্রধান স্তর রয়েছে।গুরুমন্ডল(Bryosphere)
কেন্দ্রমন্ডলের উপরিভাগ থেকে ভূত্বকের নিম্নস্তর পর্যন্ত প্রায় ৭০০ থেকে ২৯০০ কিলোমিটার বিস্তৃত স্তরকে গুরুমন্ডল বলে। এটি মূলত ব্যাসল্ট শিলা, সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ দ্বারা গঠিত। তবে সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম এর আধিক্য থাকার কারণে এই স্তরটি সীমা(SiMa) নামে পরিচিত।গুরুমন্ডলের ১০০ কিলোমিটার গভীরতা তাপমাত্রা আনুমানিক ১১০০ডিগ্রি থেকে ১২০০ডিগ্রি সেলসিয়াস। বহিঃ কেন্দ্রমন্ডলের সীমানায় এর তাপমাত্রা ৩০০০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছাকাছি। গুরুমন্ডল দুই ভাগে বিভক্ত। ১. উর্ধ্ব গুরুমন্ডল, যা ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। লোহা ও ম্যাগনেশিয়াম দ্বারা গঠিত। ২. নিম্ন গুরুমন্ডল যা প্রধানত আয়রন অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড ও সিলিকন ডাই অক্সাইড দ্বারা গঠিত। এটি ৭০০ কিমি থেকে ২৯০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত।
কেন্দ্রমন্ডল(Centrosphere)
গুরুমন্ডলের ঠিক পরেই রয়েছে কেন্দ্রমন্ডল। কেন্দ্রমন্ডল, গুরুমন্ডল এর নিম্নভাগ থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ৩৪৭৯ কিলোমিটার বিস্তৃত। এর গড় ঘনত্ব প্রায় ১০.৭৮ সেমি। কেন্দ্রের দিকে ঘনত্ব বাড়তে থাকে। ভূকম্পন তরঙ্গের সাহায্যে জানা গেছে যে, কেন্দ্রমন্ডলের একটি তরল বহিরাবরণ রয়েছে, যা প্রায় ২২৭০ কিলোমিটার পুরু এবং কঠিন অন্তঃভাগ আছে, যা প্রায় ১২১৬ কিলোমিটার পুরো। কেন্দ্রমন্ডলের উপাদান গুলো হল- লোহা, নিকেল, পারদ, সীসা ।তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা, সেই কারণে এই স্তরের নাম নাইফ (NiFe)।File Name: পৃথিবীর গঠন
File Format: PDF
No. of Pages:2
File Size:415 KB
Click Here to Download
ভারত এবং পৃথিবীর অঞ্চল ভিত্তিক ভাষা সমূহ নিয়ে একটা PDF তৈরি করুণ।
ReplyDelete