মৌলিক অধিকার কয়টি ও কী কী?
মৌলিক অধিকারের সংজ্ঞা
ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অংশের [Part-III] অন্তর্গত 12-35 নং ধারায় মৌলিক অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলােচনা করা আছে। সাধারণভাবে নাগরিকদের অধিকারসমূহের মধ্যে যেগুলি ব্যক্তিত্ব বিকাশের পক্ষে একান্ত অপরিহার্য সেগুলিকেই মৌলিক অধিকার বা Fundamental Rights বলা যায়। প্রকৃতপক্ষে, মৌলিক অধিকার হল সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত ও রাষ্ট্র কর্তৃক বাস্তবায়িত দাবি। কিন্তু মৌলিক অধিকারগুলি ব্যক্তিসত্ত্বার পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত হলেও এই অধিকারগুলির কোনােটিই সীমাহীন বা অবাধ নয়। কোনাে ক্ষেত্রে সংবিধান নিজে এবং কিছু ক্ষেত্রে পার্লামেন্টও এই অধিকারগুলির ওপর বাধানিষেধ আরােপ করতে সক্ষম। ভারতীয় সংবিধানে মোট ৬টি মৌলিক অধিকার বর্ণিত রয়েছে। এই অধিকারগুলি হল—সাম্যের অধিকার, স্বাধীনতার অধিকার, শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার, সংস্কৃতি ও শিক্ষাবিষয়ক অধিকার এবং সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার।মৌলিক অধিকার গুলো কী কী?
১. সাম্যের অধিকার (১৪-১৮ নং ধারা):
❐ কোন নাগরিককে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, ভাষা এবং রাজ্যের ভিত্তিতে কোন ভেদাভেদ করা চলবে না।
২. স্বাধীনতার অধিকার (১৯-২২ নং ধারা):
❐ এই অধিকারে সবাইকে স্বাধীনভাবে কথা বলার,ভাষণ দেবার, নিজেদের মত বিনিময়ের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
❐ সকল নাগরিক দেশের যেকোনো অংশে স্বাধীন ভাবে আসা যাওয়া করতে পারবে।
❐ দেশের যে কোন অংশে বসবাস করার স্বাধীনতা থাকবে।
❐ স্বাধীনভাবে পয়সা রােজগার এবং খরচ করার অধিকার থাকবে।
৩. শােষণের বিরুদ্ধে অধিকার (২৩-২৪ নং ধারা):
❐ চৌদ্দ বৎসরের কম বয়সী কোন বাচ্চাকে কোন কারখানায়, খনি বা কোন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লাগানাে যাবে না।
❐ কোন মানুষকে কেনাবেচা অর্থাৎ ক্রীতদাসে পরিণত করা যাবে না।
❐ কোন ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কাজ করানো যাবে না।
❐ বিনা পারিশ্রমিকে কাউকে বেগার খাটানাে যাবেনা।
❐ শােষণকে ঘাের অপরাধ মান্য করা হয়।
৪. ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার (২৫-২৮ নং ধারা):
❐ প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম মানা বা পালন করার স্বাধীনতা আছে।
❐ কোন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে কোন বিশেষ ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য না করা।
৫. সংস্কৃতি ও শিক্ষাগত অধিকার (২৯-৩০ নং ধারা):
❐ ভারতবাসী হিসাবে প্রত্যেককে তাদের নিজ নিজ ভাষায় শিক্ষা লাভের অর্থাৎ পড়া এবং লেখার সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে।
৬. সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার (৩২ নং ধারা):
❐ এই অধিকারে বলা হয়েছে, সরকার অথবা কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না। যদি এমন কিছু ঘটে তাহলে আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন। কোর্ট উক্ত ব্যক্তির মৌলিক অধিকার রক্ষা করবে।
❐ আইন ভঙ্গ না করা পর্যন্ত কোন নাগরিক নিজেকে দোষী বলে সাব্যস্ত হবেন না।
❐ কোন ব্যক্তি কোন অপরাধ সংঘটিত করলে তার বিরুদ্ধে একের বেশি মােকদ্দমা চালানাে যাবে না।
প্রসঙ্গত, মূল ভারতীয় সংবিধানে সাত প্রকারের মৌলিক অধিকারের উল্লেখ থাকলেও ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ৪৪তম সংশোধনীর দ্বারা সম্পত্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ।
Read More::
No comments:
Post a Comment
Dont Leave Any Spam Link